আমিই সেই নারী

প্রথম যেদিন জন্ম নিলাম নিষ্পাপ হয়ে
পরিচয়ে সেদিন মানুষ নয় হয়েছিলাম মেয়ে
কজন খুশি বোঝা যাইনি অনেক ছিলো গঞ্জনা
সেদিনও মা ইশারাই বুঝেছিল মেয়ে হওয়ার যন্ত্রণা
মুখে অনেকের হাসি থাকলেও
তুঙ্গে ছিলো মানসম্মান
বোঝাইনি কেও যার ঘরে মেয়ে আসে
সেই কিন্তু সৌভাগ্যবান।।

অনেক কিছু পেরিয়ে যখন পৌঁছালাম যৌবনে
পুরুষ তখন সব ভুলে কামনাটাই পুষল মনে
রঙ বেরঙের স্বপ্নে এসে
দেখাল নতুন আশার আলো
হাজারো প্রতিশ্রতি বোঝালো
আজীবন বাসবে ভালো
মেনে নিল অভিভাবক বুঝলো ছেলে ভীষণ সোজা
বিদাই দিলেই বাঁচে তারাও
মেয়ে যেহেতু একটা বোঝা
কিন্তু কিছু পুরুষ শুধুই পুরুষ
তাদের ধর্মজ্ঞানের বড্ড অভাব
জানেনা মেয়ের সঠিক দায়িত্ব পালনে
পূর্ণ একটা হজ্বের সওয়াব।।

এক পৃথিবী ছেড়ে এবার স্বপ্নের দেশে দিলাম পাড়ি
সেখানেও আমি মানুষ নয়, উপাধিতে শুধুই নারী
আমার জীবন যৌবন উৎসর্গ করলাম নামে যার
আসলে সেও জানতো না একটা স্ত্রীর কি অধিকার
যার আশাই আমি কাটিয়ে উঠি অসহ্য সব দিন
তার কাছেও আমার আবেগানুভূতি
সবটাই মূল্য হীন
শুধু কামনার উন্মাদনাতেই
খুঁটিয়ে দেখে আমার রূপ
যেখানে হওয়ার কথা ছিল
পরস্পরের পোশাক স্বরূপ।।

অন্তর বাহির সবটাই বিষাক্ত
আজ নারী নির্যাতনে
কোথায় পাবো নিরাপত্তা ?
প্রশ্ন সবার মনে
একা পেলেই ছিড়ে খাচ্ছে মিলে সদলবলে
ইনসাফ গুলোও আজ পিষ্ঠ হচ্ছে
রাজনীতির পদতলে।।

কিন্তু পুরুষ তুমি এখনও ভীষণ বোকা ও নির্বোধ
কি দিবে জবাব?
যেদিন বিচার বসাবে শ্রেষ্ঠ বিচারক
নারীর অধিকার ও আব্রু নিয়ে
যে পুরুষত্ব দেখাও সদর্ভে
কখনো কি মনে পরেনা ?
জন্ম তোমার এক নারীরই গর্ভে
নারীর ক্ষণস্থায়ী সব সুখ ভাঙছ যখন
অত্যাচারের কলে
তখন স্মরণে রেখো তোমার চিরস্থায়ী সুখ
কিন্তু লুকায়িত
একটা নারীর – ই পদতলে।।