|
---|
আহা!এই সুন্দর আসমানী নীলিমায় হৃদয়ে আসে নীরব প্রশান্তি! অনুচ্চারিত অনুভূতি ছুঁয়ে যায়। নিঃশ্বাসের শব্দে স্বপ্নগুলি ভেসে বেড়ায়। দূর ছায়ায় মেঘের ভেলা আরামের ডানা মেলে। সময়ের বৃত্তবন্দী হয়ে ক্ষয়হীন পুণ্যের বাতি জ্বালিয়ে বিরতিহীন চাকায় তোমার দুয়ারে কড়া নেড়ে যাই। নিশ্চয়ই তোমার লক্ষ্যের সীমানায় ঘর বাঁধি বহু জোযনের সীমানায়। কী অপার মহিমা তোমার! অশ্রুনদীর জলে ভেসে যাই দূর সীমানায়। তোমার ক্ষমায় বাধানো ঘাটের সিঁড়ি বেয়ে জন্নাতের পথে মৃদুমন্দ তালে প্রশান্তির হৃদয় নিয়ে এগিয়ে যাই। আশ্রয় নেয় দূর সাগরের কিনারায়। থোকা থোকা ঘাসফুল মেঘের ভেলায় মাথা দোলায়। আহা, কী মনোরম! লক্ষ্য করি তোমার পবিত্র মহা সমুদ্রের এক পলকা হিমেল হাওয়া।
হৃদয় জুড়িয়ে যায়।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর গেয়েছেন-
“আকাশ ভরা সূর্য তারা বিশ্বভরা প্রাণ। ভ্রমি বিস্ময়…….”
বিজ্ঞানীদের পর্যবেক্ষণ আবার অন্যরকম। আকাশ কেন নীল। গোধূলি কেন রক্তরাগের রঙে রঙিন হয়েছে? ভারতীয় বিজ্ঞানী ডক্টর চন্দ্রশেখর ভেঙ্কটরামন এর উত্তর খুঁজে রসায়ন পদার্থ বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেলেন।
সূর্যের সাত রঙের রশ্মির ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট্য আছে, এদের তরঙ্গ দৈর্ঘ্য ও ভিন্ন। বেগুনি রঙের আলোর দৈঘ্য সব থেকে কম, আর লালের দৈঘ্য সব থেকে বেশি। সূর্যরশ্মি বাতাসের ধূলিকণা আর গ্যাসের অনুর উপর আপতিত হয় তখন কম দৈর্ঘ্যের রঙগুলো বিক্ষিপ্ত হয়। হলদে, কমলা, লাল প্রভৃতি বড়ো বড়ো তরঙ্গ-দৈর্ঘ্যের রঙগুলো পৃথিবীর দিকে ছুটে আসে। নীল জাতীয় রঙগুলো বিক্ষিপ্ত হয় বলে আমরা আকাশকে নীল দেখি।
আবার ঊষার রক্তরাগে আমরা মোহিত হই। সুবহে সাদিকের জান্নাতী মনোরম পরিবেশে প্রকৃতি প্রেমী পাগলপারা হয়ে।
যখন গোধুলীর আধারঘন ছায়ায় ছেয়ে আসে, পাখির দল কুলায় ফেরে, তখন পশ্চিশ আকাশ লজ্জায় লাল হয়ে ওঠে। মনে হয় যেন পৃথিবীর ব্যস্ততা মিটিয়ে আরামের শয্যা তৈরী করল, একটু বিশ্রামের নিঃশ্বাস নিতে।
কবির কন্ঠ এমন সময়ে গেয়ে ওঠে-
“দিনান্তে যবে ব্যর্থ সে রবি, অস্ত শিখর পরে।
…..”
এবার স্রষ্টার সাজানো সংসারের কাঠামোটি লক্ষ্য করা যাক-
সূরাহ শামস এ কত সুন্দর শপথ এর কথা সাজিয়ে আমাদের উপহার দিলেন মহান স্রস্টা-
“শপথ সূর্যের এবং ওর কিরণের। শপথ চন্দ্রের, তখন ওটা সূর্যের পর আবির্ভূত হয়। শপথ দিবসের, তখন তার সূর্যকে প্রকাশ করে। শপথ রজনীর, যখন তার সূর্যকে আচ্ছাদিত করে। শপথ আকাশের এবং যিনি তা’ নির্মাণ করেছেন তাঁর। শপথ পৃথিবীর এবং যিনি তা’ বিস্তৃত করেছেন তাঁর।
শপথ মানুষের এবং তাঁর, যিনি তাকে সুঠাম করেছেন।
অতঃপর তাকে তার অসৎকর্ম ও সৎকর্মের জ্ঞান দান করেছেন।
সে সফলকাম হবে, যে নিজেকে পবিত্র করবে।
এবং সে ব্যর্থ মনোরথ হবে, যে নিজেকে কলুষিত করবে।”
(আল-কুরআন, সূরা শামস৯১,১-১০)
এই সাজানো সংসারে পরকালের জীবনই উত্তম।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা উওম জীবন গঠনের মাধ্যমে সফলতার সুসংবাদ দান করেছেন।
‘উত্তম’ এর অর্থ হলো পরিপূর্ণ। সেখানকার স্বাদও পরিপূর্ণ, দয়াও পরিপূর্ণ। সেখানকার সুখ, আনন্দ চিরস্থায়ী। শাশ্বত, চিরমুক্তির বিনোদন। আলহামদুলিল্লাহ। চলুন জান্নাতের নহরে অবগাহনের জন্য সফলতার অঙ্গনে মুক্ত খুঁজে আনি।
আপনার মতামত